ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি দেখে নিন

ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি দেখে নিন

ইউরোপের যে দেশগুলোতে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের মানুষেরা যেতে চাই তার মধ্যে ইতালি অন্যতম। বাংলাদেশীদের ইতালি যেতে চাওয়ার কারণ হলো ইতালিতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা অনেক বেশি টাকা পেয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে অনেক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ যেমন সৌদি আরব, ওমান, কাতারে যায় কিন্তু সেখানে খুব বেশি টাকা আয় করতে পারে না। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বেশি আয় করার সুযোগ থাকে না।

তবে ইতালিতে প্রতি মাসে লাখ টাকার কাছাকাছি আয় করার সুযোগ থাকে বলেই ইতালি যাওয়ার আগ্রহ থাকে সবার। এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ইতালিতে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশ থেকে এত মানুষ ইতালিতে যায় তারা সাধারণত কোন কাজ করে টাকা আয় করে। যারা ইতালি সম্বন্ধে খুব বেশি কিছু জানেন না তাদের জন্যই আর্টিকেলটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনি যদি ইতালি যাওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন তবে এই তথ্যগুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। চলুন দেখে আসা যাক ইতালিতে কোন ধরনের কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

ইতালিতে সবচেয়ে যে কাজের বেশি চাহিদা থাকে তাহলে রেস্টুরেন্টের কাজ। ইতালিতে অনেক বড় বড় শহর রয়েছে যেখানে বাইরের দেশগুলো থেকে অনেক মানুষ ঘুরতে আসে। এই শহরগুলোর রেস্টুরেন্ট গুলোতে অনেক মানুষের ভিড় থাকে প্রতিনিয়ত। তাই রেস্টুরেন্টের কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণ শ্রমিক প্রয়োজন হয়। শ্রমিক ছাড়াও এখানে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর লোক ও প্রয়োজন হয়। কোন ব্যক্তি যদি রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর উপর পড়াশোনা করে ইতালি যেতে পারে তবে তার চাকরির কোন অভাব হবে না।

এছাড়াও ওয়েটার হিসেবে কেউ রেস্টুরেন্টের কাজ করতে চাইলে যেকোনো সময় করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীরাও পার্ট টাইম জব হিসেবে রেস্টুরেন্টে কাজ করার সুযোগ পায়। রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করে যে কেউ প্রতি মাসে প্রায় লাখ টাকার কাছাকাছি আয় করতে পারে। অর্থাৎ ইতালির মুদ্রায় এই টাকার পরিমাণ হবে প্রায় এক হাজার ইউরো। আবার কেউ যদি রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্ট এর কাজের জন্য ইতালি যায় তবে তার আয়ের পরিমাণ আরো বেশি হবে।

রেস্টুরেন্টের কাজের পর ইতালিতে যে কাজের চাহিদা অনেক বেশি থাকে তা হলো ডেলিভারি ম্যান। ইতালি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশ নয়। এখানে শহর থেকে অনেক দূরে গ্রামগুলোতেও মানুষ বসবাস করে। তাই যেকোনো ডেলিভারির জন্য বিভিন্ন কোম্পানি ডেলিভারি ম্যান নিয়োগ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার পর যে কেউ ডেলিভারি ম্যানের কাজ নিতে পারে। ডেলিভারি ম্যান এর কাজ করেও সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকার মতো আয় করা সম্ভব। তবে এই কাজ করার জন্য দক্ষতা থাকা খুবই জরুরী।

রেস্টুরেন্টের ওয়েটার এবং ম্যানেজমেন্টের কাজের চাহিদা ইতালিতে রয়েছে এ বিষয় নিয়ে আমরা আগেই কথা বলেছি, এর পাশাপাশি ইতালি রেস্টুরেন্টগুলোতে শেফের চাহিদা অনেক বেশি। ইতালির বাঙালী রেস্টুরেন্টগুলোতেও বাঙালি খাবার রান্না করার জন্য শেফ দরকার হয়। কেউ যদি দক্ষ রাঁধুনি হয়ে থাকেন তবে ইতালি গিয়ে ভালো মানের রেস্টুরেন্টগুলোতে কাজ নিতে পারেন। রাধুনীর কাজ করে ইতালিতে মোটা অংকের টাকা আয় করা সম্ভব যা বাংলাদেশে কখনো সম্ভব নয়।

সবশেষে যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব তা হলো আপনি যদি তাহলে থেকে আরও বেশি টাকা আয় করতে চান তবে যে কোন কাজে দক্ষ হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি রেস্টুরেন্টের কাজ করতে চান তবে এই কাজে অভিজ্ঞতা আপনাকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রথম দিকে খানিকটা অসুবিধা হলেও আস্তে আস্তে মানিয়ে নিতে পারবেন। ভাষা শেখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ ভাষা জানা থাকলে সেখানকার স্থানীয় মানুষের সাথে যোগাযোগ করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এছাড়াও আপনার কাজের পরিধি বাড়ানোর জন্য অন্যান্য কাজগুলো আয়ত্ত করার চেষ্টা করুন। আশা করি পরিশ্রম করতে পারলে ইতালি যাওয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ‌ নিজের অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *