১মিলিয়ন মানে বাংলাদেশের কত টাকা ?

১মিলিয়ন মানে বাংলাদেশের কত টাকা ?

আজ এই আর্টিকেলে আমরা জানবো এক মিলিয়ন ডলার সমান কত বাংলাদেশি টাকা। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না এক মিলিয়ন সমান কত টাকা এবং এক মিলিয়ন ডলার সমান বাংলাদেশের কত টাকা। যারা এই বিষয়ে খোঁজ করে থাকেন তাদের জন্যই আজকের এই আর্টিকেলটি। আপনি এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়লে আরও জানতে পারবেন মার্কিন ডলারের দাম বৃদ্ধি বিষয়ক এবং এর মুদ্রামান বিষয়ক তথ্য।

বাংলাদেশে মার্কিন ডলারের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কয়েক মাস আগেও ১ মার্কিন ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকায় বিনিময় মূল্য ছিল গড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই বিশ্ববাজারে মুদ্রামানে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্ববাজারে বিভিন্ন মুদ্রার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার উপরে অনেক দেশের অর্থনীতি নির্ভর করে অর্থাৎ মুদ্রামান সরাসরি একটি দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

ডলারের দাম বেড়ে গেলে বাংলাদেশের সকল শিল্পের কাঁচামালের দাম সেই হারে বেড়ে যায়। এর ফলে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সমূহের দাম বেড়ে যায়। বড় বড় শিল্পের জন্য বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি আমদানি করতে হয় এবং তার দাম ডলারের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। ডলারের দাম বেড়ে গেলে বিদেশ থেকে সেই জিনিসগুলো কিনতে বেশি খরচ হয়। আগে যখন ডলারের দাম কম ছিল তখন কাঁচামাল ও বিভিন্ন জিনিসের দাম কম ছিল। আগের চেয়ে ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়া মানেই সকল বিদেশী পণ্য ও কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়া।

আমেরিকার স্থানীয় মুদ্রাকে ডলার বলে। বিশ্ববাজারে আন্তর্জাতিক সাধারণ মুদ্রা হল মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক লেনদেন থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতেই আমাদেরকে ডলারের উপরে নির্ভর করে থাকতে হয়। মার্কিন ডলারের আধিপত্য কিন্তু আগে থেকেই এমন ছিলনা। বিশ্বের বাজারে ধীরে ধীরে এই জায়গাটা করে নিতে বেশ সময় লেগেছে মার্কিন ডলারের। বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ কারেন্সি হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে এক বিশাল ইতিহাস। সেই ইতিহাসের কথা আজকে নাই বা বললাম। তবে অতীতে সোনা বা রুপ বা কমোডিটি মানি ব্যবহার করা হতো বিশ্বব্যাংকের মুদ্রার রিজার্ভ হিসেবে।

কারণ কমোডিটি মানি অর্থাৎ সোনা বা রুপার একটি অন্তর্নিহিত মূল্য আছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে এই পর্যায়ে চলে এসেছিল মার্কিন ডলার যেখানে মার্কিন ডলারই হল নতুন সোনা। ভিন্ন ভিন্ন দু’টি দেশের বাণিজ্যও হতে লাগল মার্কিন ডলারের মাধ্যমে। পরবর্তীতে রিজার্ভ মুদ্রা হিসেবে সোনা বা রূপাকেই বাতিল ঘোষণা করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। আজ বিশ্ববাজারে তাই একক ও অভিন্ন, আন্তর্জাতিক সাধারন মুদ্রা হিসেবে আমরা মার্কিন ডলারকেই পাই। মার্কিন ডলারের এই একচ্ছত্র আধিপত্যেই কিন্তু নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বিশ্ববাজার এবং বিশ্ব। আমরা অর্থনৈতিক লেনদেন, বিনিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্য কোনটাই কিন্তু মার্কিন ডলার ছাড়া কল্পনা করতে পারি না।

বিদেশে ঘুরতে যাবেন? চট করে অ্যামাজন থেকে কোন একটা জিনিস কিনবেন? দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যাবেন? প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে আপনি বুঝতে পারবেন মার্কিন ডলারের গুরুত্ব। ডলার ছাড়া যেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যই অচল। দেশ রাষ্ট্র থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে সব জায়গায় আপনি মার্কিন ডলারের প্রভাব লক্ষ্য করবেন। মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের আন্তঃরাষ্ট্রীয় লেনদেন হচ্ছে প্রতি মুহূর্তে। এক মিলিয়ন ডলার মানে বাংলাদেশের কত টাকা জানেন কী? অঙ্কটা বেশ বড় না হলেও আমরা কিন্তু অনেকেই জানি না এক মিলিয়ন মার্কিম ডলার সমান আসলে কত টাকা।

চলুন দ্রুত একটা হিসাব করে ফেলি। 1 মিলিয়নের আক্ষরিক রূপ হল 1 এর পরে 6 টি শূন্য অর্থাৎ 10,00,000। 1 মিলিয়ন সমান হল 10 লক্ষ। তাহলে 1 মিলিয়ন বললে আমরা 10 লক্ষ বুঝব। 1 মিলিয়ন টাকা মানে হল বাংলাদেশের 10 লক্ষ টাকা। কিন্তু 1 মিলিয়ন ডলার মানে কিন্তু তা নয়। 1 মিলিয়ন ডলারের হিসাব বের করতে হলে জানতে হবে আপনাকে ডলারের মুদ্রামান অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ডলারের বিনিময় হার। বর্তমানে 1 মার্কিন ডলার সমান বাংলাদেশের 107.02 টাকা। তাহলে, 1 মিলিয়ন ডলার সমান হল (10,00,000 x 107.02) টাকা অর্থাৎ গুণ করে পাই 10,70,17,600 টাকা। কথায় বললে হবে দশ কোটি সত্তর লক্ষ সতেরো হাজার ছয়শত টাকা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *