১ বিলিয়ন ডলার সমান কত টাকা ?

১ বিলিয়ন ডলার সমান কত টাকা ?

অনেক সময়ই আমরা 1 বিলিয়ন ডলারের তহবিল অথবা 1 বিলিয়ন ডলারের বাজেট আমাদের দেশে বা বিদেশে দেখে থাকি। আবার বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে থাকে বিভিন্ন প্রজেক্টে, এমনকি বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানও ক্রয়-বিক্রয় হয়। উদাহরণস্বরূপ: ইলন মাস্ক 44 বিলিয়ন আমেরিকান ডলারে টুইটার কিনে নিয়েছেন।

আবার স্বনামধন্য যোগাযোগের সাইট ফেসবুক 1.9 বিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নিয়েছেন মোবাইল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে বার্তা আদান-প্রদানকারী জনপ্রিয় সেবা হোয়াট্সঅ্যাপ-কে। এদিকে বাংলাদেশে পদ্মা সেতু তৈরি করতে ব্যয় হল 3.56 বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ডলার আমাদের প্রাথমিক কারেন্সি না। 1 বিলিয়ন ডলার কত টাকা এটা বুঝতে এজন্য আসলে অসুবিধা হয়। আর এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য, যদি আপনি জানতে চান যে 1 বিলিয়ন ডলার মানে বাংলাদেশের কত টাকা।

১৭৮৫ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন কংগ্রেস ডলার প্রবর্তন করে। এটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘হার্ড কারেন্সি’ হিসেবে গণ্য করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিশ্ব মুদ্রা বাজারে। বাংলাদেশের টাকা (BDT) মার্কিন ডলারে পেগড্‌ ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে অর্থাৎ, মুদ্রার বিনিময় হার অপরিবর্তিত থাকে, তবে নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রয়োজনমত মুদ্রামান পুনঃমূল্যায়ন করে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়। 1 ডলার 100 সেন্টের সমতুল্য মান বহন করে।

এটি এখন বিশ্বের সর্বাধিক প্রচলিত কারেন্সি। ইউরো আসার পর আমেরিকান ডলারের ভূমিকা একটু কমে গেলেও পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও অনেকগুলো দেশেই সরকারি মুদ্রা হিসাবে ডলার ব্যবহৃত হয়। মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক ব্যবহার দুই ধরনের। এটি আন্তর্জাতিক দেনা-পাওনা মেটানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে এবং এটি সর্বাধিক প্রচলিত একটি রিজার্ভ কারেন্সী। এটি হল বিশ্বের প্রধান ‘রিজার্ভ কারেন্সি’, যেটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত এবং এই মুদ্রাকে রাষ্ট্রগুলো সঞ্চয় করে রাখে।

আমেরিকান ডলার আন্তর্জাতিক বৈদেশিক বিনিময় মুদ্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আমেরিকান ডলারকে ব্যক্তিগত অর্থ লেনদেনে, ডলার বিনিময় হিসেবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় মুদ্রা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। আগে অনেক বছর ধরে বেশিরভগ দেশে স্বর্ণের রিজার্ভকে আদর্শ রিজার্ভ সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হত। কিন্তু ১৯৭১ সালে আমেরিকান ডলার থেকে স্বর্ণে সম্পদ রূপান্তর বন্ধ করে দেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন। তখন থেকে আমেরিকান ডলারই রিজার্ভ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রা।

ডলারের গুরুত্ব কেমন সেটা বুঝাতে ব্যক্তি পর্যায়ে একটা উদাহরণ দেই। ধরুন বেড়াতে গেছেন বিদেশে। হোটেল বুক করতে চাইলে আপনাকে ডলারে মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আপনি অন্য কারেন্সি ও ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু ডলারের গ্রহণযোগ্যতা বেশি। আনার রাষ্ট্র পর্যায়ে দেখতে পাবেন, কোন দেশ অন্য দেশের কাছ থেকে কোন কিছু কেনার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূল্য পরিশোধ করে ডলারে। বিদেশ থেকে যত পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে ডলারের মাধ্যমেই সে সবকিছু কিনতে হয়। আবার যত পণ্য রপ্তানি করে ডলারের মাধ্যমেই তার মূল্য বুঝে নেয়। বিশ্বে যত ক্রয়-বিক্রয়, লেনদেন, আমদানি-রপ্তানি হয় তার প্রায় ৯০ শতাংশই হয় আমেরিকান ডলারের মাধ্যমে। এই কারেন্সির মাধ্যমে পুরো বিশ্ব নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।

এখন দেখে নেই 1 বিলিয়ন ডলারকে টাকায় কীভাবে হিসাব করব।

আমাদের জানা আছে যে,1 মিলিয়ন সমান 10 লক্ষ। আর 1000 মিলিয়ন সমান 1 বিলিয়ন। তার মানে 10 মিলিয়ন হল 1 কোটি। 100 মিলিয়ন মানে হল 10 কোটি। সুতরাং 1 বিলিয়ন মানে হল 100 কোটি। এখন জানতে হবে টাকা-ডলারের সম্পর্ক। বর্তমানে বাংলা টাকায় 107.02 বাংলাদেশী টাকা সমান 1 মার্কিন ডলার। যদিও খোলা বাজারে এই মুদ্রামান পরিবর্তনীয়। বিশ্ব বাজার অনিযায়ী এই মুদ্রামান ওঠা-নামা করে। আমরা এই ডলার রেট হিসেবে যদি টাকায় রূপান্তর করি তাহলে 1 ডলার সমান 107.02 টাকা। তাহলে এক বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশী টাকায়, 1,00,00,00,000 US$= 1,00,00,00,000×107.02 টাকা = 10701,76,00,000 টাকা। কথায় বললে হবে একশত সাত বিলিয়ন সতেরো মিলিয়ন ছয়শত হাজার টাকা।

টাকা হিসেবে 1 বিলিয়ন অনেক বড় একটি পরিমাণ। আবার অনেক বড় পরিসরে ধরলে এটা অনেক বেশি টাকাও না। আমাদের দেশের বড় বড় প্রকল্পের বাজেটও এর কাছাকাছি পরিমাণের হয়, যেমন পদ্মা সেতু করতেই প্রায় 4 বিলিয়ন খরচ হয়েছে। তবে এত বেশি পরিমাণ টাকার ব্যবহার বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রেই হয়। যেমন বাণিজ্যিক হিসাবে, অর্থ লেনদেনে, বিনিয়োগে বা প্রকল্পে। তবে ব্যক্তি হিসেবে 1 বিলিয়ন ডলার সারাজীবন বসে খাওয়ার জন্য যথেষ্ট।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *