১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে ?

পাসপোর্ট শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। পাসপোর্ট আসলে কি? চলুন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল থেকে পাসপোর্ট সম্পর্কে জেনে নেই এবং সেই সাথে জেনে নেই বিভিন্ন মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে কি পরিমান টাকা পয়সা খরচ করতে হয়।

মূলত পাসপোর্ট হল একটি ভ্রমণ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট বা নথি যেটি কিনা একটি দেশের সরকারের মাধ্যমে তৈরি করে দেওয়া হয়। পাসপোর্টে একজন ভ্রমণকারীর সকল সাধারণ তথ্য যেমন নাম, জন্মস্থান, পিতামাতার নাম, স্বাক্ষর, এবং অন্যান্য চিহ্নিতকরণ তথ্য লিপিবদ্ধ করা থাকে।

ইতিমধ্যে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশেও ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। ই-পাসপোর্ট মানে হলো ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট যা কিনা যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠযোগ্য। এটাকে ডিজিটাল পাসপোর্ট ও বলা যেতে পারে। পাসপোর্ট এর এমন আধুনিকায়নের ফলে বর্তমান ই-পাসপোর্ট এর গঠন পূর্বের পাসপোর্ট বই থেকে বেশ ভিন্ন। যেমন পাসপোর্ট বইয়ে তথ্য সম্বলিত প্রথম যে দুটি পাতা থাকে, ই-পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে সেটা আর থাকছে না। উক্ত জায়গাতে থাকছে একটি এন্টেনা এবং পলিমানের তৈরি কার্ড। কার্ডের ভিতরে একটি চিপ সংস্থাপনের মাধ্যমে পাসপোর্ট ব্যবহারকারীর সকল তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ই পাসপোর্ট এর ডাটাবেজের অভ্যন্তরে পাসপোর্ট ব্যবহারকারীর প্রায় তিন ধরনের ছবি, চোখের আইরিশ এবং ১০ আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা থাকবে। যার ফলে একজন ভ্রমণকারী কোনো দেশে গেলে সে দেশের কর্তৃপক্ষ খুব সহজে তার সম্পর্কে সবকিছু জানতে পারবে।

এবার তাহলে পাসপোর্ট করতে বর্তমান সময়ে কি রকম খরচ হয় সে সম্পর্কে কথা বলা যাক। মূলত পাসপোর্ট তৈরি করার ক্ষেত্রে এর মেয়াদ, পৃষ্ঠা সংখ্যা, এবং ডেলিভারির সময়ের উপর ভিত্তি করে খরচে ভিন্নতা হয়।

এই আর্টিকেল লেখার সময়ের আপডেট অনুযায়ী ৪৮ পেইজ সম্বলিত পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে রেগুলার খরচ ৪০২৫ টাকা, এক্সপ্রেস খরচ ৬৩২৫ টাকা, এবং সুপার এক্সপ্রেস খরচ ৮৬২৫ টাকা।

অন্যদিকে ৬৪ পেইজ সম্বলিত পাঁচ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে রেগুলার খরচ ৬৩২৫ টাকা, এক্সপ্রেস খরচ ৮৬২৫ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস খরচ ১২০৭৫ টাকা।

এবার আমরা কথা বলব ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে গেলে কেমন খরচ হয় সে সম্পর্কে।
বর্তমানে ৪৮ পেইজ সম্বলিত ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট করতে গেলে রেগুলার খরচ ৫৭৫০ টাকা, এক্সপ্রেস খরচ ৮০৫০, এবং সুপার এক্সপ্রেস খরচ ১০৩৫০ টাকা।

অন্যদিকে ৬৪ পেজ সম্বলিত ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে রেগুলার খরচ ৮০৫০ টাকা, এক্সপ্রেস খরচ ১০৩৫০ টাকা এবং সুপার এক্সপ্রেস খরচ ১৩৮০০ টাকা।

এখানে একটা জিনিস বলে রাখা ভালো, সেটা হলো এখানে রেগুলার খরচ মানে হলো নির্ধারিত সাধারণ খরচ। কিন্তু আপনি যদি জরুরী পাসপোর্ট সেবা পেতে চান তাহলে আপনাকে এক্সপ্রেস মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আরো জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্ট সেবা পেতে চাইলে আপনাকে সুপার এক্সপ্রেস প্যাকেজ গ্রহণ করতে হবে।

এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি। আপনি যদি আমেরিকা থেকে ৪৮ পেজ সম্বলিত ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে চান তাহলে রেগুলার খরচে আপনাকে গুনতে হবে 137.50 ডলার । এক্সপ্রেস সেবা পেতে চাইলে গুনতে হবে ১৯২.৫০ ডলার।

আবার আপনি যদি আমেরিকা থেকে ৬৪ পেজ সম্বলিত 10 বছর মেয়াদী পাসপোর্ট তৈরি করতে চান সে ক্ষেত্রে রেগুলার খরচ পড়বে ১৯২.৫০ ডলার। অন্যদিকে এক্সপ্রেস সেবার ক্ষেত্রে খরচ করতে হবে ২৪৭.৫০ ডলার।

মনে রাখবেন পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য কোন প্রকার দালালের সাথে যোগাযোগ করার দরকার নেই। আপনি নিজেই ঘরে বসে পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারেন। এতে করে যেমন আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে, তেমনি নির্ধারিত খরচের বাইরে কোন অতিরিক্ত টাকাও খরচ করতে হবে না। “এ-চালান” অ্যাপ দিয়ে আপনি ঘরে বসেই বিকাশ, রকেট, নগদ এবং অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট ফি জমা দিতে পারবেন। আগের মত আর ফি জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে কোন ব্যাংকে যেতে হবে না।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *