১ ভিউ কত টাকা ?

১ ভিউ কত টাকা ?

ইউটিউব বা ফেসবুকে কত ভিউতে কত টাকা দেয় আমরা অনেকেই এই ব্যাপারে জানি না। আমরা আজকে কথা বলব ইউটিউব এবং ফেইসবুকে কত ভিউতে কত টাকা পাওয়া যাবে। এটা সবারই জানা যে ইউটিউবভিডিও প্লাটফর্মের মত এখন ফেইসবুক ভিডিও প্ল্যাটফর্মও অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা সময় কাটানোর জন্য ফেসবুকে বা ইউটিউবে নাচ, গান, নাটক, সিনেমা, ফানি ভিডিও ইত্যাদি দেখে থাকি। ফেসবুকে পেজ মনিটাইজেশন আসার পর ভিউ প্রতি কত টাকা পাওয়া যায় এই ব্যাপারে মানুষের কৌতুহল বেড়েছে। কারণ ফেসবুকের ভিডিও গুলো খুব সহজেই ভাইরাল হয়ে যায় শেয়ার করা সহজ বলে। আজ আমরা দু’টি প্ল্যাটফর্মের ভিউ প্রতি টাকার ব্যাপারেই কথা বলব।

প্রথমেই কথা বলব ইউটিউব ভিডিও প্লাটফর্ম নিয়ে। আসলে ভিউ এর উপর ভিত্তি করে ইউটিউব কখনও টাকা দেয় না। আপনি কোন নতুন চ্যানেল তৈরি করলে এবং ভালো মানের ভিডিও নিয়মিত আপলোড করতে থাকলে একসময় আপনার চ্যানেলের ভিউ বাড়তে শুরু করবে এবং সাবস্ক্রাইবার বাড়বে। তবে এই ভিউ বা সাবস্ক্রাইবার এর উপরে আপনার ইনকাম নির্ভর করে না। ভিউ আসা শুরু করা মাত্রই আপনি ইনকাম শুরু করতে পারবেন না।

এখান থেকে ইনকাম করতে হলে এপ্লাই করতে হবে ইউটিউব মনিটাইজেশন এর জন্য। এর জন্য পূর্বশর্ত হলো এক বছরে 4000 ঘন্টা অর্থাৎ 2,40,000 মিনিট ওয়াচ টাইম থাকতে হবে এবং 1000 সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে। ভিডিও কনটেন্ট ভালো হলে 4000 ঘন্টা ওয়াচ টাইম খুব অনায়াসেই পূরণ হয়ে যাবে। এই সবগুলো রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করার পর আবেদন করতে পারবেন। তারপর ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আপনার চ্যানেল দেখবে এবং যাচাই করে সর্বোচ্চ 30 দিনের মধ্যে আপনাকে মেইল পাঠিয়ে জানাবে এলিজিবল কিনা আপনার চ্যানেলটি।

কত ভিউতে কত টাকা দেবে এটা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। ইউটিউব কত ভিউতে কত টাকা দেবে এটা নির্ভর করে ভিডিওটি কোথায় দেখা হচ্ছে তাঁর ওপর এবং সেই ভিডিওটির সিপিএম(CPM) এখন কত চলছে তার ওপর। CPM বা cost per miles বলতে বোঝায় যে ঐ ভিডিওটিতে 1000 ভিউতে আপনি যে টাকা পাবেন। সিপিএম নির্ভর করে অ্যাডের দামের উপর। একেক দেশে অ্যাডের দাম একেক রকম। যেমন আমেরিকার সিপিএম ভারতের তুলনায় অনেক বেশি।

আপনার ভিডিও যদি আমেরিকাতে বেশি থাকা হয় তাহলে আপনার ইনকাম হবে বেশি, কারণ আমেরিকাতে অ্যাডের দাম ভারতের তুলনায় বেশি । অর্থাৎ একই ভিডিও আমেরিকাতে 1000 জন দেখলে ধরুন আপনি পাবেন 5 ডলার এবং ভারতে 1000 জন দেখলে আপনি পাবেন 1 ডলার। কারণ আমেরিকাতে সিপিএম চলছিল 5 ডলার এবং ভারতে এক ডলার। আবার সবগুলো ভিউ পয়েন্ট নিয়ে শতকরা একটা সিপিএম বের করে রাখা হয় এবং সেটা ওই ভিডিওর একচুয়াল সিপিএম। যেমন ভারত এবং আমেরিকার শতকরা সিপিএম হল 3 ডলার।

আবার এই অ্যাড দেখানোর কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। 1000 ভিউ এর মধ্যে 40 টি অ্যাড আসতে পারে এবং পরের 1000 ভিউতে 50 বা 30 টি অ্যাডও আসতে পারে। আবার একেক অ্যাডের দাম একেক রকম। আরেকটা মজার বিষয় হলো বিশ্বকাপের সময়ে অ্যাডের দাম আর সাধারণ ক্রিকেট ম্যাচের সময়ে অ্যাডের দাম আলাদা। অর্থাৎ সময় করে বিবেচনা করেও অ্যাডের দাম ওঠানামা করে। আবার যারা ভিডিও আপলোড করে থাকেন তারা সবাই একই হারে অ্যাড পাবেন তাও নয়। তো যেহেতু ইউটিউব অ্যাডের দামের ভিত্তিতে টাকা দেয় তাই প্রতি ভিউতে কত টাকা আসবে তা নির্দিষ্ট নয়।

ফেসবুকের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। অনেক কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য ফেসবুককে টাকা দেয়। এর মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠান অনেক বেশি পরিমাণে টাকা দেয় আবার কোন কোন প্রতিষ্ঠান কম টাকা দেয়। ফেসবুক থেকে সেই কোম্পানির অ্যাডগুলো দেখানো হয়। যে কোম্পানি তার বিজ্ঞাপনের জন্য বেশি টাকা দিয়েছে সেই কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখালে ফেসবুকের বেশি ইনকাম হয়। আর কম দামের অ্যাড দেখালে কম ইনকাম হয়।

100000 ভিউতে মাঝেমাঝে 10,000 টাকা ইনকাম হয় আবার মাঝেমাঝে 5,000 টাকা ইনকাম হয়। এটা পুরোটাই নির্ভর করে ভিডিওতে দেয়া অ্যাডের ওপর। ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও আপলোড দিয়ে অনেক ভিউ হলেও কিন্তু ইনকাম করা যায়না। পেজ মনিটাইজেশন চালু করা থাকলেই কেবল ফেসবুকে ইনকাম করা সম্ভব।

তো বুঝতেই পারছেন প্রতি ভিউতে কত টাকা দেয় সেটা হিসাব করা বেশ জটিল একটা কাজ। এটা ব্যাক্তি ও স্থানভেদে সবসময়ই ভিন্ন। আর যদি জানতেই চান, তাহলে একটা চ্যানেল বা পেজই না হয় খুলে ফেলুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *